অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দাদের ওপর দখলদার ইসরাইলের পাশবিক হামলা অব্যাহত রয়েছে। প্রতি মুহূর্তে শহীদ ফিলিস্তিনির সংখ্যা বাড়ছে। দূর থেকে বোমা মেরে গাজাকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার মিশন অব্যাহত থাকলেও ফিলিস্তিনি সংগ্রামীদের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়ার সাহস এখনও দেখায়নি দখলদার বাহিনী।
স্থল অভিযানের ঘোষণা দিয়েও বারবার তারা পিছিয়ে দিচ্ছে। নিরস্ত্র, অসহায় নারী-শিশুসহ বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের নির্বিচারে হত্যার মাধ্যমে দখলদার ইসরাইল এ পর্যন্ত যা কিছু করেছে তার পুরোটাই কাপুরুষতা। নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষের ওপর নির্বিচার গণহত্যা কখনোই বীরত্ব হতে পারে না। কাপুরুষোচিত এসব হামলার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের মুক্তি সংগ্রামীদের দুঃসাহসিক ও বীরত্বপূর্ণ আল-আকসা তুফান অভিযানে ইসরাইলি ব্যর্থতাকে ঢাকা দেওয়া যাবে না, সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে না।
এ প্রসঙ্গে প্রতিরোধ সংগ্রাম বিষয়ক প্রখ্যাত ইরানি বিশ্লেষক ড. মাসুদ আসাদুল্লাহি বলেছেন, ইসরাইলি সেনাবাহিনী নিজেকে অজেয় সামরিক শক্তি এবং তাদের অবৈধ সীমানাকে অভেদ্য বলে দাবি করে আসছিল। গোটা পশ্চিম এশিয়ায় এমন কোনো শক্তি ছিল না যারা তাদেরকে পরাজিত করতে পারে। এমন একটা অবস্থায় পৌঁছেছিল যে, ইসরাইলের ভেতরে আঘাত করার অবস্থায় কেউ ছিল না।
তিনি আরও বলেন, আল-আকসা তুফান অভিযানের পেছনে যেসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিল, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যোদ্ধারা দুই দিনে তাদের সেসব লক্ষ্য-উদ্দেশ্য অর্জন করতে পেরেছে। তারা ১৯৪৮ সালের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে ২২টি ইহুদি উপশহরের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। একইসঙ্গে তারা বহু ইহুদিবাদীকে বন্দী করতে পেরেছে। পরিস্থিতি সামলে নেয়ার জন্য ইসরাইলি সেনাবাহিনীর দুই দিন লেগে গেছে। হামাস ইসরাইলের দর্প ভেতরে-বাইরে সর্বত্র চূর্ণ করে দিয়েছে। এক সময় ইহুদিবাদী ইসরাইল গুপ্তচরবৃত্তিতে পরাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হতো, সামরিক দিক থেকে এই অঞ্চলে সবার উপরে ছিল। কিন্তু এখন এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগ্রামীরা গোয়েন্দা, সামরিক ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে তাদেরকে পরাজিত করতে সক্ষম। তারা ইসরাইলের গোটা শাসনযন্ত্রের ওপর একেবারেই নজিরবিহীন আঘাত হানার শক্তি রাখে। ফিলিস্তিনিদের আল-আকসা তুফান অভিযান ইসরাইলের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস চুরমার করে দিয়েছে। এটা পুরোপুরি স্পষ্ট হয়েছে যে, ইসরাইলে ইহুদিবাদীদের আর নিরাপত্তা থাকবে না, তারা আর নিরাপত্তাবোধ করতে পারবে না। নানা কারণে ইসরাইল থেকে ইহুদিবাদীদের চলে যাওয়ার প্রবণতা আগেও ছিল, কিন্তু সেটা ছিল খুব ধীর গতির। এখন এটা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
ড. আসাদুল্লাহির মতে, ৭ অক্টোবর অর্থাৎ আল আকসা তুফান অভিযান দিবস হচ্ছে একটি সন্ধিক্ষণ। ৭ অক্টোবরের পর থেকে অতীতের অপরাজেয় ইসরাইল পরিণত হয়েছে হাত-পা বাঁধা এক ইসরাইলে। তারা এখন নিজেদের লোকজনকেই রক্ষা করতে অক্ষম এবং নিজেদের দাবিগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ। গাজায় নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে এই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে না দখলদার ইসরাইল।
Leave a Reply